October 25, 2024, 8:18 am

সংবাদ শিরোনাম :
খুলনা জেলা কারাগারে হাজতি ও কয়েদির সাথে মারামারি ৭ম আন্তর্জাতিক Flight Safety Seminar 2024 এর সমাপনী অনুষ্ঠান বিগত ১ বছরে দুবার ঝড়ে কপাল পোড়েছে কয়রা বাসির দুর্নীতিতে অভিযুক্ত তবুও নির্বাহী প্রকৌশলী শারমিনকে গাজীপুরে পদায়ন সাবেক কমিশনার হারুনের দাপটে বসত ভিটে ছড়া এক দম্পতি   খুলনা কয়রায় হামলা করে আসামি ছিনতাই, ৫ পুলিশ সদস্য আহত খুলনা পাইকগাছায় বিগত এক বছরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১৪ আহত ৫৬  কয়রায় এক নারী বাসা বাড়ি কাজ করতে করতে বর্তমানে চা বিক্রি করেই স্বাবলম্বী কয়রা প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের সাথে পাইকগাছা উপজেলা বিএনপির সভাপতির মতবিনিময় সভা  আন্তরজাতকি এয়ারট্রাফকি কন্‌ট্রালারূক্স ডে উদযাপন

গাজীপুরে ছিনতাইকারী কর্তৃক ক্লুলেস হত্যাকান্ডের ঘটনায় মূলহোতা আরজু মিয়াসহ ০৫ জনকে রাজধানীর দক্ষিণখান ও গাজীপুরের পূবাইল হতে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১।

তাছলিমা তমাঃ র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে সবসময় বিভিন্ন ধরণের অপরাধীদের গ্রেফতার এবং হত্যার রহস্য উদঘাটনে অত্যন্ত অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। এছাড়াও র‌্যাবের সৃষ্টিকাল থেকে এ পর্যন্ত অপহরণকারী, সন্ত্রাসী, এজাহারনামীয় আসামী, ছিনতাইকারী, চাঁদাবাজ, প্রতারকচক্র, ধর্ষণকারী, পর্ণোগ্রাফি বিস্তারকারী, চোরাকারবারীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। বিশেষত সাম্প্রতিক সময়ে অনেকগুলো ক্লুলেস ও চাঞ্চল্যকর হত্যা ঘটনার দ্রুততম সময়ে নিষ্পত্তি করে র‌্যাব সাধারণ জনগণের মনে আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।

গত ১৪ জুলাই ২০২৩ ইং তারিখ ভোরবেলায় ভিকটিম ফল ব্যবসায়ী মোমেন শেখ (৫০), পিতা-মৃত উসমান আলী শেখ, সাং-ছাতিয়ানি উত্তরপাড়া, থানা-কালিগঞ্জ, জেলা-গাজীপুর প্রতিদিনের ন্যায় ফল ক্রয় করার জন্য ব্যাটারি চালিত মাহবুব আলমের অটোরিক্সাযোগে গাজীপুর চৌরাস্তা এলাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা করে। পরবর্তীতে গাজীপুর জেলার হাড়িনাল হানকাটা ব্রীজের উপর পৌছলে অজ্ঞাতানামা পিক-আপযোগে ৫/৬ জন ছিনতাইকারী অটোরিক্সার গতিরোধ করে এবং ভিকটিম মোমেন শেখের কাছে থাকা ফল কেনার টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। পরবর্তীতে ভিকটিম মোমেন শেখ বাধা দিলে ছিনতাইকারীদের সাথে তার ধস্তাধস্তি হয়। এক পর্যায়ে ছিনতাইকারীরা ভিকটিম মোমেন শেখ (৫০) এর বুকে লোহার রড দিয়ে আঘাত করে মৃত্যুনিশ্চিত করে। ভিকটিম মোমেন শেখ ঘটনাস্থলে মারাগেলে ছিনতাইকারীরা ভিকটিমের মোবাইল ফোন নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। উক্ত ঘটনায় ভিকটিমের স্ত্রী মোছাঃ সেলিনা আক্তার বাদী হয়ে জিএমপি, গাজীপুর সদর থানায় অজ্ঞাতনামা ৩/৪ জন দুষ্কৃতিকারীর বিরুদ্ধে একটি ছিনতাইসহ হত্যা মামলা দায়ের করে। যা গাজীপুর সদর থানার মামলা নং-২০, তারিখঃ ১৪/০৭/২০২৩ ধারা-৩৯৪/৩০২ পেনাল কোড। উক্ত নৃশংস হত্যাকান্ডটি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে এবং বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম ও প্রিন্ট ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়ায় গুরুত্বের সাথে প্রচারিত হয়। এই ক্লুলেস হত্যাকান্ডের প্রকৃত ঘটনা রহস্য উম্মোচনের জন্য র‌্যাব-১ এর আভিযানিক দল ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং আসামী গ্রেফতারের জন্য গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে।

গত রাতে র‌্যাব-১, এর একটি আভিযানিক দল রাজধানীর দক্ষিণখান ও গাজীপুরের পূবাইল থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে উক্ত হত্যাকান্ডের মূল আসামী সহ অন্যান্য আসামী ১) আরজু মিয়া (৩৪), পিতা-শফর আলী, জেলা-নরসিংদি, ২) মোঃ সোহান (১৮), পিতা-মিটু মোল্লা, জেলা-নড়াইল, ৩) নবী হোসেন (২৯), পিতা-আব্দুল কুদ্দুস, জেলা-ময়মনসিংহ, ৪) মোঃ রাজিব মিয়া (২১), পিতা-সাবেদ আলী, জেলা-নেত্রকোনা, ৫) মোঃ শাকিল আহম্মেদ (১৮), পিতা-মোঃ চান মিয়া, জেলা-গাজীপুর‘দেরকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। এ সময় ধৃত আসামীর নিকট হতে ছিনতাইকাজে ব্যবহৃত *০১ টি পিকআপ, ০২ টি লোহার রড, ০১ টি ছুঁচালো লোহার কঞ্চি, ০১ টি লাঠি ও আসামীদের ০৬ টি মোবাইল এবং ভিকটিমের ব্যবহৃত ০১ টি মোবাইল ফোন* উদ্ধার করা হয়। র‌্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধৃত আসামীগন ভিকটিম মোমেন শেখ (৫০) কে হত্যার কথা স্বীকার করে এবং এই চাঞ্চল্যকর হত্যার লোমহর্ষক ঘটনার বর্ণনা দেয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, তারা পেশাদার ছিনতাইকারী দলের সক্রিয় সদস্য। তারা বিভিন্ন এলকায় ছিনতাই করে থাকে। এ হত্যাকান্ডের মূলহোতা আরজু মিয়ার ভাষ্যমতে তারা পূর্বের ন্যায় ছিনতাই এর উদ্দেশ্যে গত ১৪ জুলাই ২০২৩ ইং তারিখে ভোরবেলায় বাসা থেকে বের হয়ে নরুন বাজার এলাকায় অবস্থান করে এবং ভিকটিম মোমেন শেখ এর অটোরিক্সাটিকে দেখে তা ছিনতাই এর পরিকল্পনা করে। পরবর্তীতে ভিকটিমের অটোরিক্সাটি হানকাটা ব্রিজের উপরে পৌঁছালে তারা অটোরিক্সাটির গতিরোধ করে এবং অটোরিক্সা চালক মাহাবুব আলমকে অটোরিক্সা হতে টেনে হেঁচড়ে রাস্তার পাশে দাঁড় করে বুকে চাকু ধরে ভয় দেখাতে থাকে। এতে ভিকটিম মোমেন শেখ তাদেরকে ছিনতাইয়ে বাধা দিলে আরজু মিয়া (৩৪) তার হাতে থাকা সূচালো লোহার রড দিয়ে ভিকটিমের হাতে, পেটে ও বুকে আঘাত করে এবং এক পর্যায়ে সূচালো লোহার রড বুকে ডুকিয়ে গুরুত্বর রক্তাক্ত জখম করে। তার দেখাদেখি অপর সহযোগী আসামী মোঃ সোহান (১৮) তার সঙ্গে থাকা অপর আরেকটি সূচালো লোহার রড দিয়ে আঘাত করে। পরে ভিকটিমের মৃত্যু নিশ্চিত হলে ভিকটিমের সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোন নিয়ে ঘটনাস্থল হতে পলায়ন করে। পরবর্তীতে অটোচালক মাহাবুব আলম ভিকটিম গুরুত্বর জখম অবস্থায় অটোরিক্সা যোগে দ্রুত শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, গাজীপুর নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা নিরীক্ষা করে ভিকটিমকে মৃত ঘোষণা করে। আসামীদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায়, আসামী আরজু মিয়ার নামে ০১ টি এবং নবী হোসেন এর নামে ০৪ টি ডাকাতি ও চুরির মামলা রয়েছে।  গ্রেফতারকৃত আসামীদ্বয়ের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে ভাগ করুন